তাহাজ্জিতের
নামাজের নিয়ম
আরবি ‘তাহাজ্জুদ’ শব্দের
আভিধানিক অর্থ রাত জাগরণ বা
নিদ্রা ত্যাগ করে রাতে নামাজ পড়া।
শরিয়তের পরিভাষায় রাত দ্বিপ্রহরের
পর ঘুম থেকে জেগে আল্লাহর
সন্তুষ্টির জন্য যে নামাজ আদায় করা
হয় তা-ই ‘সালাতুত তাহাজ্জুদ’ বা
তাহাজ্জুদ নামাজ।
বছরের অন্যান্য সময়ের মতো রমজান
মাসে তাহাজ্জুদ নামাজের ব্যাপারে
বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।
তাহাজ্জুদ নামাজ যেকোনো সময়ই
অত্যধিক ফজিলতের কারণ। রমজান
মাসে এর সুফল বহুগুণ বেড়ে যায়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) তাহাজ্জুদ নামাজ
কখনো ৪ রাকাত, কখনো ৮ রাকাত এবং
কখনো ১২ রাকাত পড়েছিলেন। তাই
রোজাদার ব্যক্তির তাহাজ্জুদ নামাজ
কমপক্ষে ৪ রাকাত আদায় করা উচিত।
কিন্তু যদি কেউ এ নামাজ ২ রাকাত
আদায় করেন, তাহলেও তাঁর তাহাজ্জুদ
আদায় হবে। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)
বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি এশার পর দুই বা
ততোধিক রাকাত নামাজ পড়ে নেয়,
সে হবে তাহাজ্জুদের ফজিলতের
অধিকারী।’ রমজান মাসে তাহাজ্জুদ
নামাজ আদায়কালে পবিত্র
কোরআনের আয়াত খুব বেশি
তিলাওয়াত করা উত্তম। যদি দীর্ঘ
সূরা মুখস্থ থাকে, তাহলে তাহাজ্জুদ
নামাজে দীর্ঘ সূরা তিলাওয়াত করা
উত্তম।
১২ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজের প্রথম
রাকাতে সূরা আল-ইখলাস ১২ বার,
দ্বিতীয় রাকাতে ১১ বার, তৃতীয়
রাকাতে ১০ বার, চতুর্থ রাকাতে ৯ বার
অনুসারে দ্বাদশ রাকাতে একবার
পড়তে হয়।
আবার প্রত্যেক রাকাতে সূরা আল-
ইখলাস ৩ বার অথবা ১ বার হিসেবেও
পড়া যায়। আবার সূরা আল-মুয্যাম্মিল,
আয়াতুল কুরসি এবং সূরা আল-
ইনশিরাহও পড়া যায়।
তাহাজ্জুদ নামায পড়ার জন্য
নির্দিষ্ট কোন সুরা নেই। যে কোন
সুরা দিয়েই এই নামায আদায় করা
যাবে। তবে যদি বড় সুরা বা আয়াত
মুখুস্ত থাকে তবে, সেগুলো দিয়ে
পড়াই উত্তম। কারন রাসুল (সাঃ) সব
সময় বড় বড় সুরা দিয়ে তাহাজ্জুদ
নামায আদায় করতেন। তাই আমাদেরও
বড় সুরা মুখুস্ত করে, তা দিয়ে
তাহাজ্জুত নামাদ আদায় করা উচিৎ।
যাইহোক, বড় সুরা মুখুস্ত না থাকলে
যে কোন সুরা দিয়েই নামায আদায়
করা যাবে। নিয়ম হল ২রাকাত করে
করে, এই নামায আদায় করা। প্রত্যেক
রাকাতে সুরা ফাতিহা পড়ার পর, অন্য
যে কোন সুরা মিলানো। এভাবেই
নামায আদায় করতে হবে।আল্লাহ,
আমাদের সবাইকে তাহাজ্জুদের
পরিপূর্ণ মর্যাদা লাভ করার তৌফিক
দাণ করুন। আমিন.
ফরয নামাজের পর অন্যান্য সুন্নাত ও
নফল সব নামাযের মধ্যে তাহাজ্জুদ
নামাজের গুরুত্ব ফযীলত সবচেয়ে
বেশী (আহমাদ, মেশকাত ১১০ পৃঃ)
রাসুল (সাঃ) বলেন, আমাদের প্রভু
পরওয়ারদিগার তাবারাকা ওয়া
তা’আলা প্রত্যেক রাত্রে দুনিয়ার
আসমানে (যা আমাদের দৃষ্টিগোচর
হয়) নেমে আসেন যখন রাত্রের এক
তৃতীয়াংশ বাকী থাকে । অতঃপর
তিনি বলেন, তোমাদের কে আমাকে
ডাকবে! আমি তার ডাকে সাড়া দেব ।
কে আমার কাছে কিছু চাইবে আমি
তাকে তা দেব, কে আমার কাছে
ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে
ক্ষমা করে দেব (মুসলিম, মেশকাত ১০৯
পৃঃ)
রাসুল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, যে
ব্যক্তি রাত্রে ঘুম থেকে জেগে
তাহাজ্জুদের নামায পড়ে এবং সে
তার স্ত্রীকেও ঘুম থেকে জাগিয়ে
নামায পড়ায় এমনকি সে যদি জেগে
না উঠে, তবে তার মুখে খানিকটা
পানি ছিটিয়ে দেয় তাহলে তার
প্রতি আল্লাহ রহমত বর্ষণ করে থাকেন
। অনুরুপ কোন মহিলা যদি
রাত্রিকালে জাগ্রত হয়ে তাহাজ্জুদ
নামায পড়ে এবং সে তার স্বামীকে
নামাযের জন্য জাগায় এমনকি স্বামী
না জাগলে স্ত্রী তার মুখে পানি
ছিটিয়ে তার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেয়
তাহলে তার প্রতিও আল্লাহর রহমত
বর্ষিত হতে থাকে (আবু দাউদ,
নাসায়ী, মেশকাত ১০৯ পৃঃ) রাসুল
(সাঃ) বলেন, আল্লাহর নিকট অতি
প্রিয় নামায দাউদ (আঃ) এর নামায ।
তিনি অর্ধেক রাত ঘুমাতেন এবং
রাতেন তৃতীয় ভাগে নামাযে
দাঁড়াতেন আর ৬ষ্ঠ ভাগে আবার
ঘুমাতেন (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত
১০৯ পৃঃ)
Wednesday, November 9, 2016
তাহাজ্জুত নামাজের নিয়মঃ
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment